“হার্বার্টকে কি নিয়ে এলেই ভালো হত?” শুধোলেন ম্যাক্স, বড্ড অস্থির লাগছে তাঁকে।
মাথা নাড়লেন ফ্রয়েড, বন্ধুর অস্থিরতা দেখে তিনিও একটু বিচলিত “না এখনই ওকে সামনাসামনি না আনলেও চলবে। আর রাস্তাতেই যখন বেরোতে ভয় পাচ্ছে বাড়ির মধ্যেই থাকুক”।
ম্যাক্স হতাশ গলায় বললেন, “কিন্তু এর তো একটা বিহিত করা দরকার, প্রায় মানসিক অসুখের পর্যায়ে চলে গেছে ব্যাপারটা। বাড়ির মধ্যেও যখন থাকছে, ঘোড়ার ছবি দেখলেই বইয়ের পাতা বন্ধ করে দিচ্ছে। আমি সবসময় জানতে পারি না কিন্তু আমার স্ত্রী বেশ কয়েকবার এটা হতে দেখেছেন”।
“কিন্তু আপনি বলছিলেন না ঘোড়ার ছবি আঁকতে ও বেশ ভালোবাসে?”
মাথা নাড়লেন ম্যাক্স, “ঘোড়া নয়, জিরাফের ছবি এঁকেছে। এই যে, আমি নিয়েও এসেছি”।
হাত বাড়িয়ে কাগজটা নিলেন ফ্রয়েড, পাঁচ বছরের হিসাবে বেশ কনফিডেন্ট ছোট্ট ছোট্ট স্ট্রোকে আঁকা ছবি। জিরাফের আউটলাইন টি খুঁটিয়ে দেখতে দেখতে হঠাৎ থমকে গেলেন, মুখ তুলে দেখলেন ম্যাক্স মাথা নাড়ছেন, “আমারও সবার আগে ওটা চোখেই পড়েছে কিন্তু। এবং আমার ধারণা এখানেই রহস্যের চাবিকাঠি লুকিয়ে”।
অধ্যাপক জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকালেন।
“সিগমুন্ড, আমার ধারণা ঘোড়ার অস্বাভাবিক লম্বা যৌনাঙ্গই ওর ভয়ের কারণ; আমার স্ত্রীও এই থিয়োরীকে সমর্থন করেন। সেই ভয়ের কারণটাই এ ছবিতে ধরা পড়েছে, নাহলে ওর বয়সী ক’জন বাচ্চা জিরাফের যৌনাঙ্গটিকে এত প্রমিনেন্টলি আঁকবে? আমার মনে হয় এটাই কারণ, আপনার কাছে আসা এই ভয়কে কি ভাবে কাটিয়ে ওঠা যায় সে নিয়ে জানতে”।
ফ্রয়েডকে চুপ করে থাকতে দেখে ম্যাক্স গ্রাফ আবারো বিচলিত হয়ে পড়লেন, “আপনার কি অন্য কিছু মনে হয়?”
ফ্রয়েড ছবিটা আবারো দেখছিলেন। দেখতে দেখতে বললেন, “না না, আপনি হয়ত ঠিকই বলছেন হের গ্রাফ, তবে আমি সমস্ত পরিস্থিতিটা খুঁটিয়ে বোঝার চেষ্টা করছি। আচ্ছা, আপনাদের একটি কন্যাসন্তান হয়েছে না সম্প্রতি?”
ম্যাক্সের মুখে এবারে মৃদু হাসি ফুটে উঠল, “হ্যাঁ, হানার বয়স এখন সাতদিন “। বলতে বলতে ম্যাক্স একটু থমকে গেলেন, ” হার্বার্টের এই ভয়টা এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে ওর বোনকে দেখতে গিয়েও কাল নাকি ওর মাকে জিজ্ঞাসা করেছে বোনের ওই জায়গাটি কতদিনে বড় হয়ে উঠবে। এ তো যাকে বলে প্রায় হ্যালুসিনেশন”।
মাথা নাড়লেন ফ্রয়েড, “নাও হতে পারে। ক্লিটোরিসকে খুব ছোট পুরুষাঙ্গ অনেক বাচ্চা ছেলেই ভাবে, তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কিন্তু এটা সত্যি যে কতদিনে সেটি বড় হয়ে উঠবে এমনতর ভাবনা চট করে বাচ্চাদের মাথায় আসে না”।
ম্যাক্সের দিকে তাকালেন ফ্রয়েড, “হয়ত আপনিই ঠিক, ম্যাক্স। কিন্তু আমি তাও একটু সময় চাই। কিন্তু এর মধ্যে যদি কোনো উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে তাহলে অবশ্যই জানাবেন”।
সে রাত্রে ম্যাক্সের লেখা পুরনো চিঠিপত্র ঘাঁটতে বসে ফ্রয়েডের নোটবই ভরে উঠল। একটি চিঠি বিশেষত বড়ই ভাবিয়ে তুলেছে তাঁকে – কয়েক সপ্তাহ আগে ম্যাক্সের স্ত্রী জানিয়েছেন স্নান করানোর সময় হার্বার্টকে তিনি বেশ কয়েকবার বকাবকি করেছেন নিজের যৌনাঙ্গে হাত দেওয়ার জন্য, মার বকুনি খেয়ে হার্বার্টের রীতিমতন অভিমান-ও হয়েছে।
আরো কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করলেন ফ্রয়েড।
ইতিমধ্যে ম্যাক্স জানিয়েছেন নিজের কাজে খুব কম সময়েই বাড়িতে ছিলেন তিনি, কিন্তু একদিন সময় করে ছেলেকে নিয়ে চিড়িয়াখানা বেড়াতে গেছিলেন। হার্বার্ট শুধু ঘোড়া নয়, জিরাফ বা হাতিরা যে জায়গায় থাকে সেগুলো এড়িয়ে চলেছে। তাতে নিজের থিয়োরী নিয়ে ম্যাক্সের বিশ্বাস আরোই দৃঢ় হয়েছে।
উত্তর দিলেন ফ্রয়েড, “ম্যাক্স, আপনি একবার হার্বার্টকে জিজ্ঞাসা করুন ঘোড়া দেখে ওর ঠিক কেন ভয় হয়? এই সামান্য প্রশ্নটা হয়ত অনেক আগেই জিজ্ঞাসা করা দরকার ছিল”।
তিন দিনের মধ্যে ম্যাক্সের উত্তর এসে গেল, পাঁচ বছরের হার্বার্ট জানিয়েছে ঘোড়া দেখলেই তার মনে হয় ঘোড়ার কামড়ে সে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
ফ্রয়েডের চিঠি পেয়ে পরের সপ্তাহে ম্যাক্স দেখা করতে এলেন। হয়ত নিজের থিয়োরী নিয়ে বিশ্বাসটা জোরদার হওয়ার জন্যই আগের দিনের সেই অস্থিরতাটা আর নেই। ধূমায়িত কফির কাপ ম্যাক্সের হাতে তুলে দিতে দিতে ফ্রয়েড শুধোলেন, “কাজের জন্য আপনাকে বেশ ঘন ঘনই বাইরে যেতে হয়, তাই না?”
ম্যাক্স মাথা নাড়লেন, “সে আর বলতে, ইদানীং সেমিনার দেওয়ার চাপটা বড় বেড়ে গেছে”।
“অবশ্যই”, হাসলেন ফ্রয়েড, “রেনেসাঁর সময়ে গানের বিবর্তন নিয়ে যে কাজটা করেছেন সেটা লোকে বহুদিন মনে রাখবে”।
ম্যাক্স-ও হাসছেন, “ধন্যবাদ সিগমুন্ড, ভাবতেও পারছি না এত ব্যস্ততার মধ্যেও বইটা পড়েছেন”।
“রেনেসাঁ চর্চা নিয়ে আমার নিজের-ও উৎসাহ আছে, কিছুদিন হল রেনেসাঁ ট্রাজেডি নিয়ে একটু মাথা ঘামাতে হচ্ছে। জানেন তো, গ্রীক ট্রাজেডিগুলোকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্লেষণ করা হয় রেনেসাঁ-র সময়েই”।
ইতিবাচক মাথা নাড়লেন ম্যাক্স, যদিও ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না ফ্রয়েড কেন রেনেসাঁ নিয়ে পড়লেন হঠাৎ।
ফ্রয়েড বুঝতে পারছিলেন ম্যাক্সের মনের অবস্থাটা, স্টাডি টেবলে টোকা দিতে দিতে বললেন, “হের গ্রাফ, আপনার সমস্যার জন্যই রেনেসাঁ ট্র্যাজেডি নিয়ে ফের পড়তে হল”।
“আমার সমস্যার জন্য?”, ম্যাক্স চমকে তাকালেন।
হাত তুললেন ফ্রয়েড, “সে কথা পরে। আগে বলুন তো, ছেলের সঙ্গে আপনার কেমন সম্পর্ক? বাড়িতে যখন থাকেন তখন দুজনের কেমন সময় কাটে?”
ম্যাক্সের মুখে আবার হাসি ফুটে উঠল, “আমার তো মনে হয় আমি বোধহয় ওর সব থেকে ভালো বন্ধু। বাড়িতে না থাকলে ও যে কতটা মিস করে আমাকে সেটা আমি জানি। ওর দু’বছর বয়স থেকেই কতরকম যে খেলা খেলেছি ওর সঙ্গে, লুকোচুরি বলুন কি ঘোড়া-ঘোড়া……ওর ছবি আঁকার পার্টনার-ও তো আমি”।
ফ্রয়েড এর মধ্যে উঠে জানলার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন, আপাতদৃষ্টিতে মনে হবে যেন ব্যারগ্যাসে অ্যাভিনিউ দিয়ে হেঁটে চলা মানুষজনের দিকেই তাঁর লক্ষ্য। ম্যাক্স কথা থামিয়ে এখন ফ্রয়েডের দিকেই তাকিয়ে। ফ্রয়েড যেন খানিকটা আপনমনেই বলে উঠলেন, “এই যে এত মানুষ হেঁটে চলেছে ম্যাক্স কেউ আপনার মতন ভাগ্যবান নন”।
বিমূঢ় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন হের গ্রাফ।
ফ্রয়েড ঘুরলেন, “হ্যাঁ, আপাতদৃষ্টিতে এটা একটা ট্র্যাজেডি-ই, আধুনিকতার বহিরাঙ্গে ফিরে এসেছে ধ্রুপদী এক ট্র্যাজেডি। কিন্তু ম্যাক্স, আজ আমরা ট্র্যাজেডিটা উদঘাটন করব বলেই আপনি ভাগ্যবান, আপনার ছেলেকে আরো হাজারখানা মানুষের মতন গভীর গোপন অভিশাপ নিয়ে রাস্তায় হেঁটে বেড়াতে হবে না”।
তাকিয়ে আছেন ফ্রয়েড, তাকিয়ে আছেন ম্যাক্সের দিকে।
“হের গ্রাফ, ঘোড়া নয়, আপনার ছেলে পৃথিবীতে একজনকেই ভয় পায়……”
ম্যাক্সের চোখের পলক পড়ছে না।
“সে আপনি”, একটু কি বিষণ্ণ হাসি হাসলেন ফ্রয়েড?
ম্যাক্স গ্রাফ দৃশ্যতই স্তম্ভিত, কথা বলতেও ভুলে গেছেন।
“গ্রীক ট্র্যাজেডির কথা বলছিলাম আপনাকে, রাজা ইডিপাসের কথা নিশ্চয় জানেন আপনি। রেনেসাঁর সময়ে যে নতুন বিশ্লেষণ করা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এখন জানি রাজা ইডিপাস একজন রহস্যময় চরিত্র। ভাগ্যের দুর্বিপাকে সে তার মাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিল এতটা সহজ নয় ইডিপাসের গল্প, তার সমস্ত heroics এর পরেও মনে রাখবেন ইডিপাসের বাবা এবং মা দু’জনেই তাকে পরিত্যাগ করেছিলেন, তাঁর মা তো একাধিকবার। সারা জীবন বেঁচে থাকার শক্তি তার পরেও কি ভাবে পেয়েছিলেন ইডিপাস? দৈব শক্তি থাকলেও কার সঙ্গে ছিল, একজন সাহসী পুরুষের নাকি একজন হতভাগ্য আমআদমির? ”
চকিতে ম্যাক্সের দিকে তাকালেন ফ্রয়েড, “কিন্তু আপনি কি এই দুটোর একটা ভূমিকাতেও হার্বার্টকে দেখতে চান হের গ্রাফ?”
ধীরে ধীরে মাথা নাড়েন ম্যাক্স।
” ম্যাক্স, হার্বার্ট ঘোড়াকে অবশ্যই ভয় পায় কিন্তু সে ঘোড়া একটা প্রতীক মাত্র, হয়ত আপনার পিঠে চেপে খেলা করত বলেই ঘোড়াকেই অবচেতন মনে বেছে নিয়েছে হার্বার্ট”।
“কিন্তু আমি তো ওর কোনো অনিষ্ট করিনি, ওকে আমি প্রাণের থেকে ভালোবাসি”। হাহাকার করে ওঠেন ম্যাক্স।
মাথা নাড়েন ফ্রয়েড, “সে কথা হার্বার্ট-ও জানে আর তাই এখনো আপনি তার সব থেকে ভালো বন্ধু, এমনকি মা’র থেকেও কাছের মানুষ। কিন্তু তার অবচেতনে আপনার অস্তিত্ব শুধুমাত্র হার্বার্টকে তার মার থেকে দূরে সরিয়ে রাখার জন্য; প্রতিটিবার আপনি বিদেশ থেকে ফিরে আসেন, আর তাকে মার বিছানা থেকে সরে গিয়ে জায়গা নিতে হয় অন্য ঘরে, অন্য বিছানায়”।
রুদ্ধশ্বাসে শুনতে থাকেন ম্যাক্স গ্রাফ।
“হার্বার্টের ভয় অস্বাভাবিক লম্বা যৌনাঙ্গ নয়, ওর ভয় শিশ্নচ্ছেদে। প্রতিটিবার ঘোড়া বা জিরাফ বা হাতির যৌনাঙ্গ হার্বার্টের অবচেতনকে জানায় ওর বিপদ আসন্ন”।
“কি বলছেন প্রফেসর?”, ককিয়ে ওঠেন ম্যাক্স, “এ যে অবিশ্বাস্য”।
“অবিশ্বাস্য নয় ম্যাক্স, ওর অবচেতন যাকে শিশ্নচ্ছেদ ভাবছে সে আসলে ওর মা’র থেকে দূরে সরে যাওয়ার আসন্ন সম্ভাবনা। মনে করুন, আপনি চিঠিতে কি লিখেছিলেন? আপনার স্ত্রী ভেবেছিলেন বাচ্চা ছেলে নিজের খেয়ালে স্নানের সময় তার যৌনাঙ্গ নিয়ে খেলা করছে। তা তো নয় ম্যাক্স”।
“তবে? তবে কি?”
ফ্রয়েড এক মুহূর্ত থামেন, চকিতে দেখে নেন ম্যাক্সের বিস্ফারিত মুখটি, “এও অবচেতনের খেলা ম্যাক্স, হার্বার্টের অবচেতন দেখাতে চেয়েছে সে আপনার মতনই বয়স্ক পুরুষ। হার্বার্ট খেলা করেনি ম্যাক্স, সে দেখাতে চেয়েছিল নিজের পৌরুষ। মা’র প্রত্যাখানে তাই সে অস্বাভাবিক দুঃখ পেয়েছে”।
বিষণ্ণ, গম্ভীর মুখে বসে থাকেন ম্যাক্স, ফ্রয়েড বলে চলেন, “ভেবে দেখুন যতবার আপনি বা আপনার স্ত্রী বলেছেন ছোট্ট হানাকে বক পাখি ঝোলায় করে ফেলে গেছে হার্বার্ট মানতে চায়নি, সে জানে এটা বানানো গল্প। হয়তো নরনারীর যৌনসঙ্গমের ব্যাপারটি ঠিক কি ভাবে ঘটে তা আপনার ছেলে জানে না কিন্তু তার অবচেতন সবসময় জানিয়ে এসেছে হানাকে পৃথিবীতে আনার ব্যাপারে শিশ্নের একটা ভূমিকা আছে”।
“যবে থেকে হানা এসেছে হার্বার্টের মনে হয়েছে পৌরুষের প্রতিযোগিতায় কোথায় যেন সে হেরে গেছে, হ্যাঁ অবশ্যই অবচেতনে। তাই তড়িঘড়ি দেখে নিতে চেয়েছে বাড়িতে আসা নতুন প্রতিযোগীর কাছেও তার হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা। তাই বারংবার আপনাদের প্রশ্ন করেছে হানার যৌনাঙ্গ নিয়ে”।
“ইডিপাস কমপ্লেক্স হের গ্রাফ, আমি একে বলব ইডিপাস কমপ্লেক্স। যুগ যুগ ধরে এ কমপ্লেক্স কাজ করে এসেছে, প্রত্যেক বাবাই তাঁর অগোচরে নিজের ছেলের প্রতিযোগী হয়ে উঠেছেন”।
ম্যাক্স গ্রাফ যেন বিদ্রোহ করে উঠলেন, “কিন্তু প্রতিটি সমাজের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম আছে, কিছু পবিত্র বন্ধন……”
“পবিত্রতার কথা এখানে অবান্তর ম্যাক্স”, বাধা দেন ফ্রয়েড, “আপনি সমাজের নিয়মের কথা বলছেন, কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম-ও তো আছে। আর সেই প্রকৃতির নিয়মেই আপনার ছেলের অবচেতন-ও খুব শীঘ্রই আপনাকে প্রতিযোগী হিসাবে ভাবা বন্ধ করবে। যতদিন সেটা না ঘটে ততদিন চেষ্টা করুন প্রকৃতির এই নিয়মগুলোকেই নিজের মতন করে হার্বার্টকে বোঝাতে, আর ভুলবেন না আপনি এখন-ও কিন্তু ওর সব থেকে প্রিয় মানুষ”।
ম্যাক্সের সঙ্গে আরো বেশ কিছু বছর ধরে আদানপ্রদান চলবে চিঠিপত্রর। শীঘ্রই ম্যাক্স জানাবেন বয়সে কিছু বড় একটি মেয়েকে ভালো লাগতে শুরু করেছে হার্বার্টের, ম্যাক্স-ও বন্ধুর মতনই শুনেছেন সেই ভালো লাগার কথা। ম্যাক্স এবং তাঁর স্ত্রী একসঙ্গে বসে ছেলেকে এও বুঝিয়েছেন ন’মাস ধরে কতটা যন্ত্রণা সহ্য করতে হয় মায়েদের।
“জানতে চায়নি কেন কিভাবে এই যন্ত্রণার শুরু?” লিখলেন ফ্রয়েড।
“চেয়েছে তো”।
“কি বললেন?” প্রশ্ন পাঠালেন ফ্রয়েড
একটু দেরীতে উত্তর এল, ইতস্তত উত্তর, “জানালাম ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে তবেই ঘটবে সব কিছু”।
উত্তর পড়তে পড়তে মুচকি হাসলেন আমাদের অধ্যাপক, তিনি বিলক্ষণ জানেন হার্বার্ট বিশ্বাস করেনি সে কথা। কিন্তু তিনি এও জানেন ঘোড়া দেখে আর কোনোদিনই ভয় পাবে না ছোট্ট হার্বার্ট।
(ফ্রয়েড কেসফাইলস এর বাকি গল্প – ফ্রয়েড এবং যে ছেলেটি ট্রেন চালাতে চেয়েছিল, ফ্রয়েড এবং ইঁদুর-মানুষ)