নায়কের সঙ্গে কিছুক্ষণ

সুয়েড চামড়ার সোফার পুরোটাই হাল্কা হলুদ রঙের সিল্ক দিয়ে মোড়া,  সোফার ব্যাকরেস্টটা প্রায় ফুট তিনেক  উঁচু ; ঠিক উল্টোদিকে এগ-হোয়াইট রঙের একটি ডে-বেড, যার পেছনে দেওয়ালজোড়া কাঁচ। ডে-বেডের সামনে জাহাঙ্গীরি স্বর্ণমুদ্রার ধাঁচে বানানো তিনটি ছোট টিপয়, সেগুলোর পায়া এতই ছোট যে এরিয়াল ভিউ নিলে মনে হবে ঘরের মাঝে তিনটে দৈত্যাকৃতি মোহর ভেসে আছে। তার একটাতে কারুকাজ করা একটি ছাইদান, যেটির ঢাকনাটি আপাতত খোলা নেই – দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে ওপরে কিছু রাজস্থানী কারুকাজ। আর একটির ওপর খান তিনেক বই রাখা, ঘাড় বেঁকিয়ে বেশ চেষ্টাচরিত্র করে দেখতে পেলাম রশ্মি বনসলের ‘স্টে হাংগ্রি, স্টে ফুলিশ’, দুর্জয় দত্তের ‘ইউ ওয়্যার মাই ক্রাশ’……তিন নম্বর পেপারব্যাকটার স্পাইনের লেখাটা বোঝা যাচ্ছে না, মনে হচ্ছে কিছু গাছের পাতা মেন মলাট ছাপিয়ে ওখানে এসে ঢুকেছে। উঠে দেখব কিনা ভাবতে ভাবতেই ঘরের ডানদিকে চোখ পড়ল – সেখানে একটা আয়নার ওপর দু থাক ফ্রেম বসানো, তার একটায় আবার গোলাপী, নীল আর হলুদের কারুকাজ। আয়নার নিচেই সাদা আর গোলাপী রঙের একটা ইনলে চেস্ট, সিন্দুকটির ওপরে আবার একটা পোর্সিলিনের ঘোড়া বসানো। কিন্তু আমার চোখ টানল সিন্দুকের ঠিক পাশেই রাখা তিনটি ট্রাঙ্ক, বোঝাই যাচ্ছে সেট –  নিচ থেকে ওপরে আকার অনুযায়ী সাজানো, কালো এবং সোনালী রঙ দিব্যি মিলমিশ খেয়ে আছে সেখানে।

“হায়দ্রাবাদ থেকে এসে পৌঁছেছে,  তিন দিন আগে।” এ গলা ভোলার নয়, আমি তড়িঘড়ির উঠে দাঁড়ালাম। দেখলাম ঘরের মাঝে ঝুলে রয়েছে সেই শিশু ভোলানাথের হাসি যা নিয়ে ইন্ডাস্ট্রির প্রায় পাগলপারা দশা। রাজকীয় সাদা শার্টের মধ্য দিয়ে নির্লোম বুক দেখা যাচ্ছে, সুঠাম নিম্নাঙ্গে একটি কালো ডেনিম, আর তার নিচেই চকচক করছে বিলিতি জুতো, স্টাইল দেখে মনে হচ্ছে জন লব।  “আরে ইয়ার, বসে পড়ো…বসো, বসো” বলতে বলতে নায়ক ডে-বেডে গিয়ে আধশোয়া হয়েছেন। আমি সিংহাসনাকৃতি সোফায় একটু জড়োসড়ো হয়েই বসলাম। একটা অস্বাভাবিক চৌকো সিগারেটের প্যাকেট বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, “চলে তো?”, আমি মাথা নেড়ে একটা তুলে নিলাম। “কতক্ষণ ঠিক হয়েছিল? আধ ঘন্টা না?”……আমি ঠোঁটটা চেপে ধরে একেবারে কোণ দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে মাথা নাড়লাম, “যাদবপুরের স্টুডেন্টদের ব্যাপারটা দেখেছেন আজ?”………নায়ক নিজে দেখলাম সিগারেট নেন নি, হাতে সকালের টাইমস অফ ইন্ডিয়াটি নিয়ে এ পাতা সে পাতা করছেন, আজকে ওরা আবার একটা পাতাজোড়া ডিবেট রেখেছে দীপিকা পাড়ুকোনের বক্ষসন্ধি প্রদর্শন নিয়ে । মাথা না তুলেই বললেন, “স্টুডেন্টদের জন্য জান কবুল, আর যাদবপুর খুব ফ্রেন্ডলি জায়গা ভাই। ‘ব্যোম শঙ্কর’  সিনেমাটায় ওদের আর্টস ফ্যাকাল্টির ইউনিয়ন রুমটাই তো আমরা ভাড়া নিয়েছিলাম, কতো যে তাদের আবদার কি বলব”।  আমি একটু অবাক হলাম,  মার্চে আনন্দ পটবর্ধন এসেছিলেন জানি, অগস্টে সঞ্জয় কাক, গত বছর আবার তিন ফ্যাতাড়ু মায় দন্ডবায়স অবধি সভা করেছেন কিন্তু ব্যোম শঙ্করের খবরটা পাইনি তো। যাকগে, আসল প্রশ্নে যাই, “কিন্তু স্টুডেন্টরা যে ক্লেম করছে আপনাদের পার্টির ক্যাডাররা পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তাদের বেধড়ক পিটিয়েছে?” শিশু ভোলানাথ চমকে উঠলেন, “আররররে………এটা কবেকার খবর?”……”এই তো কাল ভোররাতে ঘটেছে”……”সরি, নো কমেন্টস – ডিটেলস না নিয়ে কিছু বলতে পারছি না”।

“কিন্তু আপনার ভক্তরা একটা জিনিস ডেফিনিটলি জানতে চায় – এই যে আপনার পার্টির কিছু কিছু নেতা বলছেন পেড়ে ফেলব, মেরে ফেলব, পার্টির ক্যাডা্র পৈতৃক সম্পত্তির পুরোটা না পেলে মাকে সুদ্ধ ঝেড়ে ফেলব      ………..এই ভায়োলেন্ট কথাবার্তা কে কি আপনি সাপোর্ট করেন?”

“হে হে হে………তুমি তো ভাই অর্ণবের মতন সওয়াল করছ। ভক্তরা জানতে চায়, দেশ জানতে চায় – কারা এরা? আমার সঙ্গে তো দেখা হলে একটাই কোয়েশ্চন আওড়ায় “গুরু, রূপশ্রীকে কবে আনছ?”

আগের প্রশ্নটাকে চু কিত কিত করে পেরিয়ে যাচ্ছেন দেখেও আমার বিশেষ তাপউত্তাপ হল না, মেঘ না চাইতেই জল পেয়ে গেছি।  এডিটর বার বার ভয় দেখিয়েছেন রূপশ্রীকে নিয়ে অন্তত খান তিন চারেক প্রশ্নের উত্তর না নিয়ে ফিরলে জোড়া গির্জার কাছের কোন একটা রাস্তায়  ইন্টারভিউ নিতে পাঠাবেন – কোন এক দলের নেতারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের মতামত জানানোর জন্য তৈরী হয়ে বসে আছেন, এদিকে সাংবাদিকদের দেখা নেই।

“রূপশ্রীকে তাহলে কবে নিয়ে যাচ্ছেন?”

নায়কে ভুরূটা একটু কেঁপে উঠল কি? “জানেন তো সব কিছুই, আবার কেন বেকার প্রশ্ন এসব?” হঠাৎ তুমি থেকে আপনিতে শিফট করতে করতেই তুলে নিয়েছেন সেই তৃতীয় বইটি যার নামটা দেখতে পাচ্ছিলাম না। “আমরা এখন শুধুই ভালো বন্ধু, এই দেখুন না বইটা গিফট করেছে………কি সুন্দর বই।” দেখলাম ‘চাঁদের পাহাড়’। শুধোলাম, “এত ব্যস্ততার মধ্যে বই পড়ার সময় পান?”………”নাহ, আমি না বুঝলেন খুব একটা পড়ুয়া না, আর বাংলা খুব একটা ভালো জানি না। এই বইটা তো আবার স্টুডিও থেকে দিয়েছে”………বলে দুর্জয় দত্তের বইটা দেখালেন। ও বাবা, স্কুপ নিউজ! “তাহলে আপনার নেক্সট প্রোজেক্ট দুর্জয় দত্তের বইয়ের ওপর বেস করে?”

“না না,  খেপলেন নাকি আপনি? আগে সাউথ থেকে মুভি হয়ে আসুক………”

“সে কি, এ তো দিল্লীর বই……”

“তাতে হলটা কি। দিল্লী, মুম্বই কেউ এখন স্ক্রিপ্ট নিজে লেখে না, সাউথ আগে পথ দেখাবে……তবে না।” বলে সেই মনভোলানো হাসিটা হাসলেন।

চাঁদের পাহাড়ের কভারটা মনে হয় খুব পছন্দ হয়েছে, আনমনেও দেখলাম বার বার হাত বোলাচ্ছেন।

“ওটা সত্যজিৎ রায়ের করা, সেটা জানেন তো?”

“মানিকদা করেছিলেন? বাব্বাহ………কি গ্র্যান্ড জিনিস না!”

আমি একটু দোনামনা করে বলেই ফেললাম, “আপনার সঙ্গে ওনার  আলাপ ছিল নাকি?”

এবার একটু লজ্জিত, “আরে না না, আমি তখন কোথায়! তবে হয়েছেটা কি, স্টুডিও পাড়ায় কিন্তু সবাই মানিকদা বলেই ডাকে, এখনো……”

ভাবলাম জিজ্ঞাসা করি “এখনো না এখনই?”, কিন্তু সেদিকে না গিয়ে বললাম, “একটা হাইপথেটিকাল প্রশ্ন করি, আপনার কি মনে হয় সত্যজিৎ যে ধরণের সিনেমা করে গেছেন তাতে আপনার মতন মেনস্ট্রীম নায়কের জায়গা হত?”

“আমার তো মনে হয় হত – একটু চাপ পড়ত হয়ত কিন্তু আয়াম আ গুড স্টুডেন্ট,  মানিকদা একটু দেখিয়ে দিলেই হয়ে যেত। আফটার অল, পুলুদাও তাই করেছেন।”

“তাহলে ঋতুপর্ণের সঙ্গে কোনো কাজ করলেন না কেন?”

“আররে, ঋতুদা ওয়জ মায় ফ্রেন্ড, ফিলোজফার অ্যান্ড গাইড। আমার সঙ্গে তো দেখা হলেই বলতেন – তুই হিন্দিটা এত ভাল বলিস যে তোর ডেট পাওয়াই মুশকিল হয়ে দাঁড়াচ্ছে, আমার জন্য একটু সময় কর।”

“হিন্দি……?”

“আরে ইয়ার, লেগ পুল আর কি। তবে এখনকার জেনারেশন হিন্দি, ইংলিশ, বাংলা মিলিয়েই কথা বলে – তো হল কি, আগের দিনের মতন হিন্দি বললে আর চলবে না, এটা কিন্তু ফ্যাক্ট।”

“গানও কি তাই জন্য বদলাচ্ছে? এই ধরুন রিসেন্টলি একটা গান শুনতে পেলাম – জিগর খুলে করতে পারি ড্যান্স………”

নায়ক এবার একটু দার্শনিক হয়ে পড়লেন, “দেখুন……আমার মতে হ্যাপিনেস হল একটা স্টেট অফ মাইন্ড। তো, লোকে যদি ওরকম লিরিক্স শুনে হ্যাপি থাকে, ক্ষতি কি? ফ্রী মার্কেটের জমানা এমনিতেও……”।

“পলিটিকসেও কি এলেন এই স্টেট অফ মাইন্ডের কথা ভেবেই?”

“না না, এত ভালোবাসা পাই; মনে হল এবার ফিরিয়ে দেওয়া দরকার, কিছু করতে হবে। এই দেখুন না শিলিগুড়িতে সেলিব্রিটি ক্রিকেট লীগের ম্যাচ হচ্ছিল, আমি আউট হয়ে ফিরছি দেখি দুজন টিনএজার মেয়ে গ্যালারির জালি ধরে একদম আছড়েপিছড়ে কাঁদছে……ইউ নো, হোয়েন দেয়ার ইজ সো মাচ ইমোশন ইনভলভড, ইউ ডোন্ট হ্যাভ আ চয়েস।”

রূপশ্রীর কোটা এখনো বাকি, প্রশ্ন করলাম, “ইন্ডাস্ট্রির ভেতরেও তো আপনার ফ্যান ফলোয়িং কম নয়। রূপশ্রী কি তাতেই ভুল বুঝলেন?”

“আরে আবার রূপশ্রী কেন, দিব্যি তো গানটান নিয়ে কথা হচ্ছিল। দাঁড়াও, তোমাকে একটা জোর খবর দি……”

দেখলাম রূপশ্রীর কথা উঠলেই কিরকম খেই হারিয়ে আপনি আর তুমির মাঝে টানাটানি চলছে।

“আমার নেক্সট ছবিতে লিরিক্স দিচ্ছেন ডিংডং গাঙ্গোলি, ইউ নো ডিংডং……না? তো হল কি, এর ডিরেক্টর রানাঘাটের ছেলে, বলে দিয়েছে ওসব জানু-খিলাড়ী-মওলা কিস্যু চলবে না, পিওর বাংলা রাখতে হবে। তো দু মাস কাজ করে ডিংডং কি গান নামিয়েছে গুরু, তুমি ভাবতে পারবে না। আমার তো মাঝে মাঝেই এত আপসেটিং লাগে এত সুন্দর ভাষাটা জানলাম না ঠিক করে……”

“দু’একটা গান বলা যাবে?”

“আরে, বলব বলেই তো মুখ খুললাম। তো হয়েছে কি এটাতে একটা লাভ ট্র্যাঙ্গল আছে – সিনটায় আছি আমি, দোয়েল আর রোহন…”

“তাই নাকি, রোহন এখনো আছেন বাজারে?”

“ভাই, গ্রামের দিকে একবার মাচা শো দিতে গিয়ে দেখ না…… ওর পেপসিকোলা গান না থাকলে লোকে ইঁট ছোঁড়ে  রে ভাই, ইঁট। তো, আমরা ডাল লেকে স্পীডবোট চালাব আর গান হবে – ” ছিপখান তিন-দাঁড় তিনজন মাল্লা… চৌপর দিন-ভর দেয় দূর-পাল্লা!” গানটার রিদমটার ভাবো একবার,  মিউজিক ডিরেকটর দুঃখ করে বললেন বাঙ্গালীর মেলোডি নিয়ে এত বাজে ক্রেজ না থাকলে বাংলার বেস্ট র‍্যাপ হতে পারত। তারপর ধরো,  আমার সঙ্গে দোয়েলের একটা দুষ্টু সিন আছে,  সেখানে দোয়েল গাইছে ” আড়ি আড়ি আড়ি, কাল যাব বাড়ি, পরশু যাব ঘর।” এর মধ্যে আবার ডিরেক্টরের স্পেশ্যাল রিকুয়েস্ট ছিল, “খোকাবাবু যায়” টাইপের কিছু রাখতে…ডিংডং সেটাও নামিয়ে দিয়েছে পাতি বাংলায়, ক্যালি আছে বস। বেঁটে ভিলেনের খানদান নিয়ে টন্ট করার জন্য একটা কোরাস আসছে, ” আঁটুল বাঁটুল শ্যামলা শাঁটুল, শামলা গেল হাটে/ শামলাদের মেয়েগুলো পথে বসে কাঁদে”। বহোত খেটেছে কিন্তু, বহোত…”

“হিট করবে বলছেন? বাজারে খবর আপনার নেক্সট সিনেমা আর সৃজিত মুখার্জীর পরের সিনেমা একই দিনে রিলিজ করছে, সৃজিতের ছবির গানের সঙ্গে এসব কম্পিট করতে পারবে?”

নায়ক একটু অফেন্স নিতে গিয়েও নিলেন না। কোত্থেকে একটা নেল-ফাইল বার করে ঘষতে শুরু করলেন মধ্যমাটি, “দেখো সৃজিত ডেডলি ছবি বানায় তবে ওর অডিয়েন্স আলাদা, যাকে বলে ইন্টেলেকচুয়ালস। আমাদের অনেক ডাউন টু আর্থ ফিল্ম, কোনো ঝাম নেই।”

“তাহলে সৃজিত ডাকলে ওনার সঙ্গে কাজ করবেন না বলছেন?”

“আররে, সে কথা কোথায় বললাম” (হাত নেড়ে টেপ বন্ধ করতে বলছেন)……

“কেন মিছিমিছি কথা ডিসটর্ট করছ ভাইটি? আজকে যেখানেই থাকি না কেন, অনেক স্ট্রাগল করতে হয়েছে। তোমাদের এরকম একটা কথায় বেকার ইন্ডাস্ট্রিতে বাওয়াল হয়ে যেতে পারে।”

স্ট্রাগলের কথা উঠতেই বোধহয় একটু অন্যমনস্ক হয়ে গেলেন, যতই হোক বাঙ্গালী রক্ত বইছে ধমনীতে। গলার সরু সোনার চেনটা উলটে গেছিল, সেটা ঠিক করতে করতে বললেন, “এই যে আয়নাটা দেখছ, এটা স্পেন থেকে আনানো।  তোমরা রূপশ্রী করে মরো, কিন্তু আমি জানি আমার একমাত্র বন্ধু এই স্প্যানিশ আয়না। যেদিন দেখব আয়না মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, আমিও ছুটি নেব”।

“গিরীশ ঘোষ-ও বলেছিলেন “দেহপট সনে নট সকলি হারায়”, তাই না?”

“গিরীশ ঘোষকে চিনি না ভাই, মানেটাও ঠিক বুঝলাম না। তবে বাঙ্গালী যখন নিশ্চয় কাজের কথাই কিছু বলেছেন।”

হঠাৎ হাত দুটো ধরে বলে উঠলেন, “এই একটা কথা লিখো তো ভাই, বাংলা আর বাঙ্গালীকে আমি জান দিয়ে ভালোবাসি, বহুত ভালোবাসা আছে এদের জন্য এ বুকে। বাঙ্গালী যদি নাও বোঝে তো কিছু এসে যায় না তাতে, ভালোবাসা থাকবে। ”

আমার প্রায় চোখ ছলছল করে উঠছিল, তাতেই বোধহয় হুঁশ ফিরল। তাড়াতাড়ি সানগ্লাস পড়তে পড়তে বললেন, “এখন বেরোতে হবে, ওঠা যাক তা’লে? আর হ্যাঁ, যা বললাম সেসব নিয়ে বেশী ভাববেন না। ফিল্মের লোক আমরা, কখন কি বলি ঠিক নেই।”

বলে চোখ টিপে চলে গেলেন ভেতরের ঘরে। আর পোর্সিলিনের ঘোড়া,  স্প্যানিশ আয়না, হায়দ্রাবাদী ট্রাঙ্ক, রাজস্থানী অ্যাশট্রের সাজানো জঙ্গলে বসে ভাবতে লাগলাম কোনটাকে সত্যি সাজাবো আর কোনটাকে মিথ্যে।