হে বঙ্গ, ভান্ডারে তব বিবিধ রতন………
সে কথা মেনে নি, ফের ভুলে যাই, আবার ধাক্কা খেয়ে মনে পড়ে – চিরন্তন প্রবাহ। কিন্তু পরিমল রায় আর কাজী অনির্বাণ এমন একটি কাজ করে ফেলেছেন যে এখন বেশ কিছু বছর মন আনচান করতেই থাকবে, খ্যাপা যেরকম পরশপাথর খুঁজে ফেরে সেরকম ভাবেই অন্তর্জালের দুনিয়া তন্ন তন্ন করে খুঁজতে থাকব এহেন রত্ন্ররাজি। অন্তর্জাল একটি অতীব বিস্ময়, পদে পদে ভুল প্রমাণিত করে একটা কথা মগজে ঢুকিয়েছে যে হাল ছাড়ার প্রশ্নই ওঠে না – আজ থেকে দশ এগারো বছর আগে, তখন ফেসবুক তো কোন ছাড়, অর্কুট-ও আসেনি, নেট দুনিয়ার কিছু বন্ধু মিলে হারিয়ে যাওয়া সিনেমার লিস্টি তৈরি করতে বসেছিলাম – ‘জিঘাংসা’ এল, ‘ এক যে ছিল দেশ’ এল, দীপঙ্কর দে’র কথা প্রসঙ্গে ‘সুবর্ণগোলক’ এল। মিউজিক ওয়ার্ল্ড থেকে মেলোডি – সবাই এসব সিনেমার নাম শুনলেই হাসতেন, বলতেন “ক্ষেপেছেন নাকি? ওসব হারিয়ে গেছে মশাই, স্রেফ হারিয়ে গেছে; কোনো কপিই নেই বাজারে”। সেকথা সত্যি, উৎসাহীরা ভিডিও ক্যাসেট অবধি খুঁজে পাননি। কিমাশ্চর্যম, ২০০৭-এ কোথা থেকে এসে গেলে জিঘাংসা, বছর কুড়ি পর জলার ডাইনীর চিৎকার শুনতে পেয়ে বেজায় খুশী। কোত্থেকে সব অজানা আপলোডাররা নিয়ে আসতে থাকলেন হারিয়ে যাওয়া চুলের ওষুধ কিম্বা খোদ হিমালয় থেকে গড়িয়ে আসা সোনার বল। বাবার কাছে শুনেছিলাম ‘কঙ্কাল’ সিনেমায় ধীরাজ ভট্টাচার্যের ভয় পাওয়ার অভিব্যক্তি নাকি কোটিতে এক, সেও দেখা হয়ে গেল (বাবা স্লাইট বাড়িয়ে বলেছেন কিন্তু সিনেমাটি স্ট্রংলি রেকমেন্ডেড)। বিচ্ছিরি সাউন্ড কোয়ালিটি নিয়ে আরো বছর খানেক পর দেখা দিল ‘ছুটির ফাঁদে’ – অসমের রিজিওনাল টেলিভিশনে নাকি একদিন দিয়েছিল, কোন সহৃদয় অসমবাসী বাঙ্গালী টিভিরিপ ভার্সনটি তুলে দিলেন। সেসব অদেখা বন্ধুদের শতকোটি ধন্যবাদ, আশায় আছি একদিন না একদিন ‘শজারুর কাঁটা’ কি ‘পদিপিসীর বর্মীবাক্স’-এরও দেখা পেয়ে যাব।
যাই হোক, আসল কথায় ফেরা যাক। পরিমল রায় এবং কাজী অনির্বাণের সম্পাদনায় গত বছর বেরিয়েছে ‘A Directory of Bengali Cinema’, আনন্দবাজার থেকে শুরু করে টাইমস অফ ইন্ডিয়া, একাধিক কাগজে রীতিমতন ভালো রিভিউ পেয়ে অনেকদিন ধরেই ইচ্ছে ছিল বইটি নেড়েচেড়ে দেখার, সম্প্রতি সে আশা সফল হয়েছে। প্রায় ন’শ পাতার বইটি কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই ডিরেক্টরি, অর্থাৎ আলোচনা-সমালোচনা-বিশ্লেষণের কোনো স্থান নেই – ঐ ন’শ পাতা ধরেই শুধুই বাংলা চলচ্চিত্র, কলাকুশলীদের নাম, প্রকাশকাল ইত্যাদির তালিকা, ১৯১৭-র ‘সত্যবাদী রাজা হরিশ্চন্দ্র’ দিয়ে শুরু, শেষ ২০১১-র ‘উনিশ কুড়ির গল্প-এ। কিন্তু সমঝদারো কে লিয়ে ইশারা হি কাফি হ্যায়, সিনেরসিকরা ওই আপাতনিষ্প্রাণ তালিকার মধ্যে থেকে খুঁজে পাবেন হাজার এক রাত জাগার খোরাক। আপনি যদি ট্রিভিয়া কালেক্টর হন তাহলে তো পোয়া বারো কিন্তু ট্রিভিয়ারসে বঞ্চিতদের জন্যও রয়েছে একটি অসামান্য রসদ – বাংলা সিনেমার পোস্টার-আর্টের স্বর্ণযুগের একটা প্রামাণ্য দলিল এই বইটি। তাসকেন (Taschen) এবং অন্যান্য ইউরোপীয় বা আমেরিকান পাবলিশিং হাউস থেকে বের হতে দেখেছি ইটালিয়ান, মেক্সিকান বা হলিউডি সিনেমার পোস্টারের কফি টেবল বুক। বাংলা সিনেমার পোস্টার নিয়েও সেরকমটি কিছু নিয্যস ভাবা যায়, শিল্পকলা হোক কি ইন্ট্রিগ কোশেন্ট কোনোদিক থেকেই কম পড়বে না।
১৯৪৩ এর সিনেমা ‘কাশীনাথ’ এর কথাই ধরুন, পোস্টার জোড়া শরৎচন্দ্রের ছবি – একজন লেখকের খ্যাতি কোন জায়গায় পৌঁছলে সিনেমার প্রমোশনে নায়ক-নায়িকা, পরিচালক, প্রযোজক সবার নাম বা ছবি বাদ পড়ে! কিন্তু ভাববেন না এটা নিউ থিয়েটার্সের একচেটিয়া স্ট্র্যাটেজী। নারায়ণ পিকচার্সের ১৯৫০ সালের ‘মেজদিদি’ কি এস-বি প্রোডাকশনের ‘শুভদা’ (১৯৫২) বা ‘মন্দির’ (১৯৫২) এর পোস্টারেও শুধুই শরৎচন্দ্র। বঙ্কিম (‘রাজমোহনের বউ’, ১৯৫১) কি রবীন্দ্রনাথ-ও (‘মালঞ্চ’, ১৯৫৩) আছেন, কিন্তু শরৎচন্দ্রের থেকে কয়েক মাইল দূরে। ইন ফ্যাক্ট, চল্লিশ কি পঞ্চাশের দশকে ‘শরৎবাবু’র গল্প-উপন্যাস নিয়ে যা সিনেমা হয়েছে তার ৮০-৯০% পোস্টারেই দেখছি শুধু লেখকের মুখ! কথায় কথায় মনে পড়ল দেখছিলাম আর্লি ফিফটিজে বায়োপিকের প্রায় বন্যা বয়ে গেছে, বিদ্যাসাগর-মধুসূদন-রামকৃষ্ণ থেকে শুরু করে এমন কি তুলসীদাস-ও বাদ পড়েননি।
অতি পুরনো বাংলা হরর, থ্রিলার, ফ্যান্টাসি ফিকশন নিয়ে আমার ফ্যান্টাসি বহুদিনের, ওই গোত্রের ভালো সিনেমা (অবশ্যই রেফারেন্স পয়েন্ট টিকে যথাযথ জায়গায় নিয়ে গিয়ে) খুঁজে বার করতে গিয়ে বেশ থ্রিল-ও অনুভব করি। তাই ‘ঝড়ের পর’ (১৯৪৭) এর পোস্টার দেখা ইস্তক মন উচাটন। প্রতুল বন্দ্যোপাধ্যায় সুলভ অলঙ্করণে দেখতে পাচ্ছি অবিশ্রান্ত বৃষ্টি ও ঝড়ের রাতে চাপদাড়ি এবং চশমা সমেত কেউ একজন আশ্রয়ের খোঁজে অজানা পথে এগিয়ে চলেছেন, বাঁ হাতটি কপালের কাছে তোলা বৃষ্টির ছাঁট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য, আর সিনেমাটিক ব্যাকগ্রাউন্ডে অলক্ষ্যে এই রাত্রীর যাত্রীর প্রতি নজর রাখছে দুটি রক্তবর্ণ, জিঘাংসামাখা চোখ। ডেস্ক্রিপশন তো পড়লেন, বলুন তো শুনেই মনে হচ্ছে না কালবৈশাখীর রাতে বসে পড়ি ঝড়ের পর এক্স্যাক্ট কি হয়েছিল জানতে? ১৯৪৯-এর ‘কুয়াশা’র পোস্টারে দেখা যাচ্ছে ধীরাজ আপাতনির্লিপ্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন, টপ লেফট কর্নার থেকে একটি মাকড়শা জাল বুনতে বুনতে এগিয়ে আসছে, জালের বিস্তার ফলো করতে করতে একসময় আপনার নজর চলে যাবে বটম রাইটে, দেখতে পাবেন আপনার উৎসাহ উদ্দীপনাকে দ্বিগুণ করে তোলার জন্য কাহিনী ও পরিচালনার ভার নিয়েছেন স্বয়ং প্রেমেন্দ্র মিত্র। আবার যদি ভেবে থাকেন শুধু হলিউডই ‘not for the fainthearted’ জাতীয় ট্যাগলাইন ব্যবহার করে এসেছে, বসুমিত্রর ভয়াল ভয়ঙ্কর ‘ভৈরব মন্ত্র’ (১৯৫১) আপনার সে ভুল ভাঙ্গিয়ে দেবে – নিকষ কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে ফুটে উঠেছে আলো আঁধারি মাখা এক কাপালিকের মুখ, মর্মভেদী দৃষ্টিতে তিনি আপনার দিকে তাকিয়ে। একটু শিউরে উঠে চোখ সরিয়ে নিয়ে নীচের দিকে গেলেই দেখতে পাবেন লেখা রয়েছে ‘কাপুরুষের জন্য নয়’। একদম ওপরে হরর ফন্টে কাঁপা কাঁপা অক্ষরে ফুটে উঠেছে ‘ভৈরব মন্ত্র’, পাশে বিশেষণ ভয়াল ভয়ঙ্কর; টাইটলের ঠিক নিচে ক্ষুদি ক্ষুদি অক্ষরে ব্যাপারটা অবশ্য প্রাঞ্জল করে বোঝানো হয়েছে – শবসাধনার মন্ত্র। ভীতু মানুষদের জন্য ১৯৫১ সাল যে ঠিক এন্টারটেইনিং ছিল না তার আরো প্রমাণ পাওয়া যায় ‘সংকেত’ ছবিতে, লাল-কালো পোস্টারের ওপরে বাঁদিক জুড়ে একটি সাদা নরকরোটি, সেখানে স্পষ্টাস্পষ্টি লেখা ” আপনি কি দুর্বলচিত্ত? তবে এ ছবি আপনার জন্য নয়”। এর পরেও যদি সামান্যতম কনফিউশন থেকে থাকে, তা দূর করার জন্য আরো লিখে দেওয়া হয়েছে শ্রেষ্ঠাংশে ‘অশরীরী প্রেত’। বসুমিত্রকে নিয়ে আরেকটু গবেষণা হওয়া দরকার, একটা হিন্ট পাওয়া যাচ্ছে যে র্যামসে ব্রাদার্সের বহু আগেই পথ দেখিয়ে গেছেন উনি, আফটার অল ‘হোয়াট বেঙ্গল থিঙ্কস টুডে’ ইত্যাদি ইত্যাদি। ‘সাদা কালো’র (১৯৫৪) পোস্টারে পাঁশুটে লালের আধিক্যই বেশী, শিশির মিত্রর পাসপোর্ট সাইজ ফটোগ্রাফের পাশেই সেখানে দেখা পাওয়া যাচ্ছে এক না-মানুষী বিভীষিকার, দু’দিক থেকে ভ্যাম্পায়ার সুলভ দুই তীক্ষ্ণ দাঁত বার হয়ে আছে, কোন অভূতপূর্ব অ্যান্টিগ্র্যাভিটির টানে তার মাথার সব চুল খাড়া।
বাংলা সিনেমার ফেল্ট হ্যাট নিয়ে ফ্যাসিনেশন-ও বহুদিনের, এ নিয়ে আগেও একটা ব্লগ পোস্টে লিখেছিলাম। ১৯৪৭ সালেই দেখছি ফেল্ট হ্যাট দিব্যি জায়গা করে নিয়েছে চিত্রবাণীর ‘রহস্যময় চিত্র ‘রাত্রি’ তে’। কুয়াশামাখা রাত্রির নিঃঝুম রাস্তায় ও কোন আগন্তুক? ফেল্ট হ্যাট পরে কোন রহস্য ঘনীভূত করতে এগিয়ে চলেছে? এর মধ্যে আবার একটা নয়ার (Noir) ফিলিং এসেছে জনবিহীন রাস্তার মোড়ের গ্যাসবাতিগুলোর জন্য। ১৯৫০-এর ‘জীবন সৈকত’-এও দেখছি রাধামোহন ভট্টাচার্য মাথায় ফেল্ট হ্যাট, মুখে পাইপ নিয়ে আবির্ভূত হয়েছেন। সিনেমার নামের আপাত-রহস্যহীনতা (বা ক্ষীণতা) কে নিগেট করার জন্য এখানেও রাত্রির পটভূমিকায় গ্যাসলাইটের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। ‘জিঘাংসা’ (১৯৫১)-র পোস্টারে তো ফেল্টহ্যাট থাকতেই হত, সাদা কালোর ম্যাট ফিনিশে সেখানে নেমে এসেছে বটের ঝুরি; আগাছায় ছেয়ে থাকা জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে সেই ফেল্টহ্যাটের চোখে পড়েছে এক রহস্যময় নারীমূর্তি। ১৯৫১-রই ‘সে নিল বিদায়’-এও ফেল্টহ্যাট, ডানদিকের শাড়ী পরা পাশের বাড়ির মেয়েটিকে বাদ দিলে মনে হবে পোস্টারটি উঠে এসেছে আমেরিকান পাল্প ফিকশন থেকে, হাতে রিভলভার এবং মাথায় ফেল্ট হ্যাট নিয়ে যিনি দাঁড়িয়ে তাকেও আদৌ বাঙ্গালী দেখতে লাগছে না।
স্রেফ জড়বস্তুর ব্যবহার-ও বেশ মন দিয়ে দেখার মতন। ১৯৫৩-এর ‘মহারাজা নন্দকুমার’-এ দেখতে পাচ্ছি ফাঁকা সিংহাসন, ভূলুণ্ঠিত মুকুট এবং বুটজোড়া পা (সম্ভবত ব্রিটিশ), ১৯৪৮-এর ‘অঞ্জনগড়’-এ আবার শুধুই দুর্গের ছবি, স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে অঞ্জন নামক গড়টিই ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র। ‘অপরাজিতা’ (১৯৫১) তে আবার সবুজ ব্যাকগ্রাউন্ডে, হলুদ লাইমলাইটে ফুটে উঠেছে একটি নীল অপরাজিতা ফুল, দূর থেকে দেখলে হঠাৎ মনে হতে পারে জোনাথন লিভিংস্টোন সীগাল প্রথম উড়তে শেখার আনন্দে গোঁত খেয়ে নিচে নামছে। ‘অপরাজিতা’-র কিন্তু স্টার-স্টাডেড কাস্ট, “মুখ্যভূমিকায় অভিনয় করেছেন” পাহাড়ী সান্যাল, ছবি বিশ্বাস, কমল মিত্র, মলিনা দেবী প্রমুখ। জরাসন্ধের ক্লাসিক উপন্যাস অবলম্বনে বানানো তপন সিংহের ‘লৌহকপাট’-এ আবার জেলের দরজা নয়, জেলরের চাবিটিকেই দেখা যাচ্ছে পোস্টারের সিংহভাগ দখল করে থাকতে।
‘সাড়ে বত্রিশ ভাজা’য় বাংলা সিনেমা নিয়ে কথা হচ্ছে আর উত্তমকুমারের কথা উঠবে না তাও কি হয়? উত্তমপ্রেমীদের জন্য কিছু পোস্টার ষোলা আনা কালেক্টর’স আইটেম, যাকে বলে অতি উত্তম কথা। যেমন ধরুন ১৯৫৮-র ‘শিকার’ ছবির পোস্টার, ব্যাকগ্রাউন্ডে দেখা যাচ্ছে জঙ্গল এবং পাহাড়, তার মধ্যে দিয়েই হাওদা পিঠে চলেছে কুনকি হাতি। ফোরগ্রাউন্ডে দাঁড়িয়ে স্বয়ং উত্তম – মাথায় টুপি, এক হাত কোমরে (যেখানে কার্তুজের বেল্ট ঝুলছে), আরেক হাতে ধরা বন্দুক, প্যান্ট গুটিয়ে ঢোকানো হয়েছে বুটের মধ্যে তাই একটা প্রক্সি ব্রিচেস ব্যাপার তৈরি হয়েছে। মুখে পাইপ, চোখে জিজ্ঞাসা, অল্প ভুরূ কুঁচকে নায়ক তাকিয়ে, গোঁফ দেখে মনে হচ্ছে ওটা নিয়েই এক বছর পরে ‘বিচারক’ এর শুটিং করতে যাবেন। সব থেকে বড় কথাটা হল, আমি জানতামই না উত্তম এরকম একটা সিনেমা করেছেন। ‘নাইট অফ দ্য হান্টার’-এ রবার্ট মিচামকে মনে আছে? বাঁ হাতের আঙ্গুলের গাঁটে গাঁটে লেখা ‘Hate’ আর ডান হাতে ‘Love’, ওরকম আইকনিক একটা পোজ হলিউডেই বা আর কটা? তাই সমরেশ বসু যদিও ‘নাইট অফ দ্য হান্টার’ অবলম্বনেই ‘কুহক’ এর চিত্রনাট্য লিখেছিলেন, উত্তমের মধ্যে রবার্ট মিচামকে খুঁজতে যাওয়ার মানে হয় না। অথচ যেই মুহূর্তে ডান চোখ বন্ধ, বাঁ চোখ খোলা উত্তমকে একটা ডেজড লুকে দেখলাম সঙ্গে সঙ্গে মনে পড়ল সেই লাভ-হেট এর অবিস্মরণীয় কনট্র্যাস্টকে। জানতেন কি তারাশঙ্করের উপন্যাস অবলম্বনে অগ্রগামী ১৯৬২তে বানিয়েছিল ‘কান্না’? সেখানেও উত্তম – ক্লান্ত, বিদ্ধস্ত, অসহায়; একটা বিরাট অক্ষিকোটরের মধ্যে নন্দিতা বোসের মুখ, আর সেখান থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে উত্তমের ওপর। জানতাম না, সলিল সেনের ‘অসাধারণ’ (১৯৭৭)-এও উত্তম ছিলেন, সেখানে আবার পরিচালক উত্তমকে দিয়ে টানিয়েছেন রিক্সা!
আই-এম-ডি-বি ফেল মেরে গেলেও পরিমল-অনির্বাণরা আছেন, জয়তু টলিউড!
বাঃ, দারুণ বইটা তো, একবার হাতে নিয়ে দেখতে হচ্ছে তাহলে! “কান্না” কিংবা “শিকার”-এর নাম এই প্রথম শুনলাম, তবে “অসাধারণ” একবার টিভিতে দিয়েছিল, পুরোটা দেখতে পারিনি, বেশ বাজে সিনেমা। 😦
“জিঘাংসা” অনেক ছোটবেলায় একবার দেখেছিলাম, কি নিয়ে গল্পটা ছিল, এখন পুরো ব্ল্যাঙ্ক!
তবে একটা সিনেমা দেখার খুব ইচ্ছে, “চুপি চুপি আসে” – ইউটিউব তন্নতন্ন করে খুঁজেও পাইনি 😦
পেলে একটু জানাবেন তো!
LikeLike
চুপি চুপি আসে নেটে আছে, তবে আপনাকে টরেন্ট ব্যবহার করতে হবে – বাংলা টরেন্ট এবং পাইরেট বে দুজায়গাতেই মিলবে।
LikeLike
বাঃ, বেশ বেশ। খুঁজে নিয়ে দেখে ফেলতে হবে।
অনেক ধন্যবাদ। 🙂
LikeLike